আ হ জুবেদঃ কুয়েতের জন্য বাংলাদেশের জনগনের অন্তরে রয়েছে বিশেষ স্থান ” কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আশিকুজ্জামান হোটেল মিলেনিয়ামে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা উল্লেখ করেন ।
৫০ তম বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে প্রতিরক্ষা শাখা , বাংলাদেশ দূতাবাস কুয়েত কর্তৃক রোববার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় স্থানীয় মিলেনিয়াম হোটেল অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টারে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর এসিস্ট্যান্ট চীফ অব স্টাফ , লঞ্জিস্টিকস এন্ড সাপ্লাই , মেজর জেনারেল খালেদ বেলাল আল ওবায়েদি ।
অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশী কূটনীতিক ও সামরিক এ্যাটাশেগন , স্থানীয় বিশিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ এবং বিদেশী অতিথিগণসহ কুয়েতে বসবাসরত বাংলাদেশী প্রবাসীগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালক দূতাবাসে নিয়োজিত ডিফেন্স এটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আবু নাছের স্বাগত বক্তব্যে বলেন, সশস্ত্র বাহিনী দিবস শুধু বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কাছেই নয় , বরং বাংলাদেশের আপামর জনগনের কাছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন দিবস । জন্মলগ্ন থেকে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী জনগনের সশস্ত্র বাহিনী হিসাবে পরিচিত । আর জনগনের কাছ থেকে আস্থা এবং এই স্বীকৃতি অর্জনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।
কুয়েতে বাংলাদেশ মিলিটারী কন্টিনজেন্ট এর প্রশংসা করে মেজর জেনারেল খালেদ বেলাল আল ওবায়েদি বলেন, শুধুমাত্র বাংলাদেশের ভৌগলিক পরিমন্ডলেই নয় , আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী আজ একটি সুপরিচিত নাম । জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের এক নম্বর শাস্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণকারী দেশ হিসাবে স্বীকৃত । বর্তমানে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ৬৪৫৮ জন শান্তিরক্ষী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষার কাজে নিয়োজিত রয়েছে এবং এ পর্যন্ত ৫৪ টি জাতিসংঘ মিশনে মোট ১,৭৮,১১৯ জন অংশগ্রহণ করেছে । বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার মহান ব্রতে এ যাবৎ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ১৩৮ জন সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং ২২৮ জন সদস্য পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন । বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় তাদের এই আত্নত্যাগ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে ।
১৯৯০/১৯৯১ সালে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি বৃহৎ দল বহুজাতিক বাহিনীর অংশ হিসাবে অপারেশন ‘ ডেজার্ট ষ্টর্ম ‘ এ অংশগ্রহন করে । পরবর্তীতে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ ১৯৯১ সাল হতে বন্ধুপ্রতীম কুয়েতের পূনর্গঠনে বিভিন্ন সহযোগিতা যেমন মাইন অপসারন , এক্সপ্লোসিভ অর্ডন্যান্স ডিসপোজাল , মেডিকেল সার্ভিস , প্রশিক্ষক , প্রশাসনিক ইত্যাদি সহায়তা দিয়ে আসছে । অপারেশন কুয়েত পূনর্গঠন কার্যক্রম চলাকালে এযাবৎ বাংলাদেশী সশস্ত্র বাহিনীর ৮০ জন সদস্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন ।
এই ঐতিহাসিক বিশেষ দিনে আমরা মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করি । আমরা স্বশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’কে । সেই সাথে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ , কুয়েত পুনর্গঠন ও জাতিসংঘ মিশনে আত্মদানকারীদের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে মাগফেরাত কামনা করি ।